ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলাই ১০০ কেজি ওজনের বাগার মাছ।
ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলাই ১০০ কেজি ওজনের বাগার মাছ। ছবি-ইমরান নাজির |
ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলাই ১০০ কেজি ওজনের বাগার মাছ। যার দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। ক্রেতারা ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টাকা বলেচে।অপর বড় মাছ টির ওজন ৯৫ কেজি।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ইছামতি
নদীতে এখন হাঁটুজলও নেই। তবে ছোট এই নদীর তীরের পোড়াদহে ৪০০ বছর ধরে বসছে
মাছের মেলা। গতকাল বুধবার দিনব্যাপী মেলায় যমুনা, বাঙ্গালী ও পদ্মার বিশাল
আকারের বাগাড়, বোয়াল, রুই-কাতলাসহ হরেক মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন তিন
শতাধিক দোকানি। মেলায় মূল আকর্ষণ ছিল যমুনায় ধরা পড়া লাখ টাকার বড় বড়
বাগাড়।
মেলাকে ঘিরে আশপাশের ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পথে পথে ছিল
উৎসবের আমেজ। গ্রামগুলোতে ছিল উৎসব আর কন্যা-বধূ-জামাইয়ের নাইওর আসার ধুম।
মেলা উপলক্ষে ঘরে ঘরে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল আত্মীয়স্বজনকে। মেলা থেকে বড়
বড় মাছ কিনে সমাদর করা হয়েছে জামাইদের। জামাইয়েরাও মেলা থেকে মাছ কিনে নিয়ে
শ্বশুরবাড়ি গেছেন নিমন্ত্রণ খেতে।
বগুড়ার সদর উপজেলার অদ্ধিরকোলা থেকে পোড়াদহ মেলার দূরত্ব
প্রায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। গতকাল সকাল ১০টার দিকে মেলায় গিয়ে দেখা গেল
লাখো মানুষের ভিড়। রংবেরঙের বেলুন ও জরি দিয়ে সাজানো হয়েছে মাছের দোকান।
বিক্রি হচ্ছে হরেক পদের মাছ।
বিরাট আকারের একটি বাগাড়কে ঘিরে কৌতূহলী দর্শনার্থীর ভিড়।
দোকানি বগুড়ার চাষিবাজারের মাছ ব্যবসায়ী সোহেল রানা (৩৫) বলেন, সপ্তাহ
খানেক আগে সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীতে জাল ফেলে ৭২ কেজি ওজনের এই বাগাড়টি
ধরেছেন জেলেরা। মেলায় বিক্রির জন্য তিনি ৭২ হাজার টাকায় কিনেছেন। এখন এক
লাখ টাকায় বিক্রি করতে চাইছেন। ক্রেতারা ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বলছেন।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে মাছ কিনতে আসা আশরাফুল ইসলাম
২৫ কেজি ওজনের বাগাড় কিনেছেন ২০ হাজার টাকায়। তিনি বলেন, ‘পরিবারের ঐতিহ্য
রক্ষায় মাছ কিনতে আসি মেলায়। দাদা আসতেন, বাবা আসতেন, কয়েক বছর থেকে আমি
আসছি।’
মেলা কমিটির সভাপতি নারায়ণ অধিকারী বলেন, কয়েক শ বছরের
ঐতিহ্যবাহী এই সন্ন্যাসী মেলা। এই মেলার সঙ্গে মিশে আছে এই এলাকার মানুষের
জীবনসংস্কৃতি। নদীর তীরে বসা এই মেলায় আগেও মাছ মিলত। এখনো মাছের জন্য
বিখ্যাত। তবে নানা কারণে দিন দিন এই মেলা ঐতিহ্য হারাচ্ছে।
ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলাই ৯৫কেজি ওজনের বাগার মাছ। ছবি-ইমরান নাজির |
No comments