পাভন হয়ে উঠতে পারেন আর্জেন্টিনার ‘গোপন অস্ত্র’
ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে পাভন এখনো অতটা পরিচিত নাম নয়। কিন্তু আর্জেন্টিনার ঘরোয়া ফুটবলে এই নামটা বহুল উচ্চারিত—সেই ১২ বছর বয়স থেকেই পাভনকে বিবেচনা করা হচ্ছে প্রতিভার ভাস্বর হিসেবে। রাশিয়া বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াদের মতো তারকাদের ভিড়েও ‘পাভন গোপন অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন’ বলে মনে করছে ইএসপিএন।
সদ্য সমাপ্ত ইতালিয়ান সিরি ‘আ’তে সর্বোচ্চ গোল করেছেন মাউরো ইকার্দি। কিন্তু তারপরও আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ দলে এই স্ট্রাইকারের জায়গা হয়নি। অথচ দলে ঠিকই জায়গা পেয়েছেন ক্রিস্টিয়ান পাভন নামের এক অখ্যাত তরুণ স্ট্রাইকার। কে এই পাভন?অখ্যাত—কথাটা পুরোপুরি ঠিক হলো না। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে পাভন এখনো অতটা পরিচিত নাম নয়। কিন্তু আর্জেন্টিনার ঘরোয়া ফুটবলে এই নামটা বহুল উচ্চারিত—সেই ১২ বছর বয়স থেকেই পাভনকে বিবেচনা করা হচ্ছে প্রতিভার ভাস্বর হিসেবে। রাশিয়া বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াদের মতো তারকাদের ভিড়েও ‘পাভন গোপন অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন’ বলে মনে করছে ইএসপিএন।
কর্ডোবার স্কুল ফুটবল থেকে উঠে এসেছেন পাভন। সেই সময় এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘তুমি কার মতো খেল বলে মনে করো?’ পাভনের জবাব, ‘মেসির মতো।’ আবারও তাঁকে একই প্রশ্ন করা হলেও পাভনের জবাব পাল্টায়নি। এখন সেই মেসির সতীর্থ হিসেবেই পাভন খেলবেন রাশিয়া বিশ্বকাপে।
আর্জেন্টিনার প্রিমেরা ডিভিশনের ক্লাব তাল্লেরেস ডি কর্ডোবার বয়সভিত্তিক দলে বেড়ে উঠেছেন পাভন। তখন তাঁর কোচ ছিলেন ড্যানিয়েল আলবোরনোস। সাবেক এই ফুটবলারের মতে, পাভন তাঁর ক্যারিয়ারে যেসব লক্ষ্য স্থির করেছেন, তার সবই অর্জন করেছেন, ‘সে আর্জেন্টিনার যুব দলে খেলতে চেয়েছে, পেরেছে। আর্জেন্টিনার বড় ক্লাবে খেলতে চেয়েছে, বোকার মতো কোনো ক্লাব। সেটাও পেরেছে। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর তাঁর লক্ষ্যটা ছিল পরিষ্কার—বিশ্বকাপে খেলা।’
পাভনের বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নও পূরণ হবে রাশিয়াতে। গত বছর আর্জেন্টিনার জার্সিতে অভিষেকের পর চার ম্যাচে এ পর্যন্ত ভালোই নজর কেড়েছেন বোকা জুনিয়র্সের এই স্ট্রাইকার। তাল্লেরেস থেকে ২০১৪ সালে বোকা জুনিয়র্সে যোগ দেওয়ার পর ধারে খেলছেন জার্মান ক্লাব কোলনে। জাতীয় দলে স্বল্প সুযোগ পেয়েই নজর কাড়ায় ইএসপিএন মনে করছে, বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সাইডবেঞ্চে হোর্হে সাম্পাওলির প্রথম পছন্দই হবেন পাভন। তবে অনেকেরই ধারণা, পাভনকে আর্জেন্টিনার একাদশেও দেখা যেতে পারে।
এই ধারণার কারণ, অ্যাটাকিং থার্ড কিংবা উইং—দুই জায়গাতেই খেলতে পারেন পাভন। আলবোরনোস তাঁর খেলার ধরনটা ব্যাখ্যা করলেন, ‘সে অ্যাটাকিং থার্ডে খেলতে পারে, গতি আনতে পারে আক্রমণভাগে। দুই প্রান্ত ধরেও খেলতে পারে। সে শুধু গোল করার জন্য হুমকি নয়, গোল করাতেও জানে। উইঙ্গার হিসেবে ম্যাচের ৭০ থেকে ৮০ মিনিট খেলতে তাঁর কোনো সমস্যাই হয় না। তিন ফরোয়ার্ড কিংবা গোটা প্রান্তও সে দখলে রাখতে পারে।’
২২ বছর বয়সী এই উইঙ্গারের সঙ্গে রয়েছে মেসির ‘প্রশংসাপত্র’, ‘কোচ যে ছকে খেলতে চান, সেখানে পাভন দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারে।’ মেসির এই ‘প্রশংসাপত্র’ যে মোটেও বাগাড়ম্বর নয়, তা বোঝা যায় পাভনের প্রতি আর্সেনালের আগ্রহ দেখে। তাঁর নামের সঙ্গে ৩৬ মিলিয়ন ডলার ‘রিলিজ ক্লজ’ থাকলেও ইংলিশ ক্লাবটি কিন্তু এখনো হাল ছাড়েনি।
No comments